১৯৯৬ সাল,দিন তারিখটা ঠিক সঠিক মনে নেই আমার।আমি তখন ফোর্থ ইয়ারে পড়াশোনা করতেছি।
আমি প্রচন্ড ব্যাথায় কাতর,দুই একবার বমিও করেছি।পরদিন ভোর সকালেই বড় ভাই তানজিং দর্জি (ম-২৪)(একসাথেই থাকতাম ২০ নাম্বার রুমে।বর্তমান তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী,মঞ্চে উপস্থিত) আমাকে নিয়ে যান আউটডোরে।
সেখানকার চিকিৎসক আমার পুরো বক্তব্য না শোনেই আমাকে ওমিপ্রাজল সহ আর কিছু ঔষধ লিখে দেন।আমি চলে আসলাম হলে।
ঔষধ খেয়ে কোনো উন্নতি হলোনা।বিকালে,আবার গেলাম ঐ স্যারের কাছে।তিনি আমার অবস্থা দেখে স্টুডেন্ট কেবিনে ভর্তি হতে বললেন।আমি ভর্তি হয়ে গেলাম।
পরের দিন বেশ কয়েকজন স্যাররা মিলে মেডিকেল বোর্ড বসল।কিন্তু সেটাও ফলপ্রসু হলোনা।কিছুক্ষণ পর হঠাৎ একজন স্যার আসলেন আমার কাছে।উসি এসে আমাকে দেখেই বললেল।আরে ওর তো এপেন্ডিসাইটিস।
এটা খুবই সহজ অপারেশন,আমি নিজেও হাজারখানেক এপেন্ডিসাইটিস অপারেশন করেছি।বাবা তোমার ভয় নেই।স্যারের এই কথাগুলো এখনও আমার স্পষ্ট মনে পড়ে।
সেদিন রাতেই আমার অপারেশন হলো,কিছুদিন পর আমি সুস্থ হয়ে উঠি।
সেদিনের ঐ মানুষটি ছিলেন খাদেম স্যার।পরবর্তীতে যিনি হয়ে উঠলেন আমার আদর্শ।আমাদের সম্পর্ক ক্রমে উন্নত হতে থাকল।
আমি এমবিবিএস শেষ করার পর এফসিপিএস করি বাংলাদেশেই।পার্ট টু পরীক্ষার ফলাফল যখন হবে বিকালের দিকে আমরা সবাই বসে আছি নিচ তলায় রেজাল্টের অপেক্ষায়। হঠাৎ স্যার আসলেন,আমাকে ডেকে নিয়ে বললেন," You have done it".
আলহামদুলিল্লাহ।
সেদিনকার পর ২০০২ সালে জুন মাসের দিকে আমি ফিরে যায় আমার নিজ দেশ ভুটানে।সেখানে একটা হাসপাতালে কাজ শুরু করি জেনারেল সার্জন হিসাবে।প্রথমদিনই আমি ছুটে গিয়েছিলাম মন্দিরে দোয়া নিতে।
এরপরদিন,এপেন্ডিসাইটিসের একজন রোগী আসল।আমি আমার জুনিয়র কলিগকে বললাম তুমি এটা করে ফেল,খুবই সহজ কাজ।না পারলে তো আমি আছিই।প্রায় ১০ মিনিট পর ও আমাকে ডাকল।আমাকে যেতেই হবে।
আমি যাওয়ার সময় অপারেশন থিয়েটারের সামনে বসা একজন সুন্দরী মহিলা এসে আমার সাথে পরিচিত হয়ে বলতেছেন,আমি এই হাসপাতালেরই একজন নতুন ডাক্তার।কদিনক'দিন আগেই কাজ শুরু করেছি।
(মঞ্চের দিকে হাত দিয়ে দেখিয়ে)
ঐদিনের সেই মহিলাটিই হলেন আমার স্ত্রী। যিনি এখন আমার সামনে উপস্থিত। আর ঐ এপেন্ডিসাইটিসের রোগী ছিলেন উনারই চাচা।
সেদিন আমি বুঝলাম এপেন্ডিসাইটিসের গুরুত্ব।
তারপর হেঁসে হেঁসেই বললেন,কে বলছে আমাদের দেহে এপেনডিস্কের কোনো Function নেই।Appendix has a great role in our society.
-ডাঃ লোটে শেরিং
একজন অসাধারণ ব্যক্তিত্বসম্পন্ন মানুষ। আসলে আপনিই একটি দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার যোগ্য।
ডাক্তার সমাজের জন্য তাঁর উপদেশঃ
Don't Be Ambitious,Do Your Best.Be A Good Human Being."আগে আপনি একজন ভালো মানুষ হন,আপনি এমনিতেই একজন ভালো ডাক্তার হয়ে যাবেন।"
আর ঐ যে বলে না,আল্লাহ যা করেন ভালোর জন্যই করেন।
ভালো থাকবেন সবাই।
কি অসাধারণ কথাগুলো! কি চমৎকার বাংলা বলতে পারেন! ধন্যবাদ ডা. লোটে শেরিং (ভুটানের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী) ।
ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং ময়মনসিংহ মেডিকেলের ছাত্র।
শুধু তাই নয়।
ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর প্রধান উপদেষ্টা ফোক দর্জি ময়মনসিংহ মেডিকেলের ছাত্র।
এবং ভুটানের পররাষ্ট্র মন্ত্রি দান্তি দর্জি ময়মনসিংহ মেডিকেলের ছাত্র...
শুধু তাই নয়।
ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর প্রধান উপদেষ্টা ফোক দর্জি ময়মনসিংহ মেডিকেলের ছাত্র।
এবং ভুটানের পররাষ্ট্র মন্ত্রি দান্তি দর্জি ময়মনসিংহ মেডিকেলের ছাত্র...