২০১৮ সালের ভর্তি পরীক্ষা নোটিশে বলে দেয়া হয় ২০১৯ সাল থেকে বহু নির্বাচনী প্রশ্নের পাশাপাশি লিখিত প্রশ্নও থাকবে। অর্থাৎ কেবল বহু নির্বাচনী প্রশ্নের উপর ভিত্তি করে পরীক্ষা না নিয়ে, এবার বহু নির্বাচনীর পাশাপাশি উত্তর করতে হবে লিখিত প্রশ্নের। কীভাবে হবে এই পরীক্ষার প্রশ্নের মানবন্টন? বহু নির্বাচনী ও লিখিত পরীক্ষার জন্য আলাদা আলাদা সময় কীভাবে ভাগ করা হবে? জেনে নেয়া যাক সেই সকল তথ্য।
নতুন ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতির মান বন্টন:
প্রথমেই জেনে নেয়া যাক মান বন্টনের ব্যাপারে। পূর্বের নিয়ম অনুযায়ী মোট ২০০ নম্বরের পরীক্ষায় ১২০ নম্বর আসতো সরাসরি ভর্তি পরীক্ষা থেকে এবং বাকি ৮০ নম্বর আসতো পরীক্ষার্থীর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বা এর সমমানের পরীক্ষায় প্রাপ্ত জিপিএ থেকে। এবার নতুন নিয়মেও মোট নম্বর ২০০ থাকলেও পরিবর্তন হয়েছে নম্বর বিভাজন। ২০০ নম্বরের মধ্যে ১০০ নম্বর আসবে পরীক্ষার্থীর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বা এর সমমানের পরীক্ষায় প্রাপ্ত জিপিএ থেকে এবং বাকি ১০০ নম্বর আসবে ভর্তি পরীক্ষায় বহু নির্বাচনী এবং লিখিত পরীক্ষা থেকে।
মাধ্যমিক বা এর সমমানের পরীক্ষায় প্রাপ্ত জিপিএ-কে গুণ করা হবে ৮ দিয়ে এবং উচ্চ মাধ্যমিক বা এর সমমানের পরীক্ষায় প্রাপ্ত জিপিএ-কে গুণ করা হবে ১২ দিয়ে।
যদি তুমি মাধ্যমিকে জিপিএ ৫.০০ পাও, তাহলে এখান থেকে তুমি পাবে ৫*৮ = ৪০ নম্বর। যদি তুমি উচ্চ মাধ্যমিকে জিপিএ ৫.০০ পাও, তাহলে তুমি পাবে ৫*১২ = ৬০ নম্বর। এভাবে মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক বা এর সমমানের পরীক্ষার জিপিএ মিলিয়ে তুমি পাবে ৪০+৬০ = ১০০ নম্বর।
মূল ভর্তি পরীক্ষা ও এর মানবন্টন:
এবার নজর দেয়া যাক মূল পরীক্ষার মান বন্টনের দিকে।
১০০ নম্বরের পরীক্ষায় ৬০ নম্বর আসবে বহু নির্বাচনী প্রশ্নের উত্তর থেকে এবং ৪০ নম্বর আসবে লিখিত পরীক্ষার প্রশ্নের উত্তর থেকে।
৬০ নম্বরের বহু নির্বাচনী অংশে মোটি কয়টি প্রশ্ন হবে এবং প্রতিটি প্রশ্নের সঠিক উত্তরের জন্য কতো মার্ক্স যোগ হবে ও প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য কতো মার্ক্স করে কাটা যাবে, তার উত্তর পেয়ে যাবে ভর্তি পরীক্ষার সার্কুলার প্রকাশিত হবার পর।
সেই সাথে ৪০ নম্বরের লিখত পরীক্ষায় কয়টি প্রশ্ন থাকবে সেটির উত্তরও পাবে তোমরা সার্কুলার থেকে।
তবে এখানে বলে রাখা ভালো, লিখিত পরীক্ষায় বড় আকারে উত্তর করতে হয় এমন কোনো প্রশ্ন থাকবে না। সংক্ষিপ্ত আকারে উত্তর দেয়া যায় এমন প্রশ্ন সেখানে করা হবে।
সময় বন্টন:
সময় বন্টনের ক্ষেত্রে আগের মতোই ১ ঘন্টা ৩০ মিনিট রাখা হয়েছে। তবে এবার যেহেতু দুই ভাগে পরীক্ষা হবে, তাই সময়ের হিসাবে থাকছে কিছু ভিন্নতা।
বহু নির্বাচনী পরীক্ষার জন্য সময় রাখা হয়েছে ৪০ মিনিট। অর্থাৎ ৪০ মিনিট সময়ের মাঝে তোমার ৬০ নম্বরের বহু নির্বাচনী দাগাতে হবে।
আর লিখিত পরীক্ষার জন্য বরাদ্দ রয়েছে ৫০ মিনিট। লিখিত পরীক্ষার জন্য আলাদা কোনো উত্তরপত্র দেয়া হবে না। প্রশ্নের মাঝেই উত্তর লেখার জায়গা থাকবে।
অর্থাৎ প্রশ্ন থাকবে সকল সংক্ষিপ্ত উত্তরের জন্য। বহু নির্বাচনী এবং লিখিত পরীক্ষার জন্য আলাদা আলাদা উত্তরপত্র সরবরাহ করা হবে। একটি পরীক্ষা শেষ হলে, তার উত্তরপত্র সংগ্রহ করে পরবর্তী পরীক্ষার জন্য প্রশ্ন ও উত্তরপত্র দেয়া হবে। তবে বহু নির্বাচনী পরীক্ষা আগে হবে নাকি লিখিত পরীক্ষা আগে হবে সেটি জানা যাবে ভর্তি পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ সার্কুলার প্রকাশের পর।
ইউনিটকথন:
প্রতিবারের মতো এবারো ৫টি ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ক-ইউনিটে সকল বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিবে। মানবিক বিভাগে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিবে খ-ইউনিটে এবং ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিবে গ-ইউনিটে। ঘ-ইউনিট হলো বিভাগ পরিবর্তনের জন্য। তুমি যদি নিজের বিভাগ বদল করতে চাও, তাহলে এই ইউনিটে পরীক্ষা দিতে পারো। তবে এর জন্য রয়েছে কিছু নীতিমালা যা ভর্তির সার্কুলার থেকে দেখে নিতে হবে।
আর সর্বশেষ চ-ইউনিটে পরীক্ষা দিতে পারো যদি চারুকলা অনুষদে পড়ার ইচ্ছা থাকে। ভর্তি পরীক্ষার জন্য আবেদন করতে হবে http://admission.eis.du.ac.bd/ এই ওয়েবসাইট থেকে। ভর্তি আবেদনের কার্যক্রম শুরু হলেই এই সাইটটি খুলে দেয়া হবে। এখানেই ভর্তি সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য তোমরা পেয়ে যাবে।
অনলাইনে কাঙ্ক্ষিত ইউনিটে আবেদনের পর টাকা জমা দিতে হবে সোনালি ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, অগ্রনী ব্যাংক এবং জনতা ব্যাংকের যেকোনো একটিতে। ভর্তি পরীক্ষার আবেদন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৫০/= টাকা। অনলাইনে আবেদন গ্রহণ করা হবে ৫ আগস্ট থেকে ২৭ আগস্ট পর্যন্ত এবং আবেদন ফি জমা দেয়ার শেষ দিন ২৮ আগস্ট। আর ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে ২৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ৫টি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
১৩ সেপ্টেম্বর – গ-ইউনিট
১৪ সেপ্টেম্বর – চ-ইউনিট (সাধারণ জ্ঞান অংশ)
২০ সেপ্টেম্বর – ক-ইউনিট
২১ সেপ্টেম্বর – খ-ইউনিট
২৭ সেপ্টেম্বর – ঘ-ইউনিট
২৮ সেপ্টেম্বর – চ-ইউনিট (অঙ্কন অংশ)
সময় মেনে ঠিকঠাক প্রস্তুতি নিলে অবশ্যই স্বপ্নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অংশ হতে পারবে তুমি। মনে রাখবে, স্বপ্নের কখনও মৃত্যু হয় না।
(তথ্যসূত্র – দৈনিক প্রথম আলো)
-সংগৃহীত