উচ্চশিক্ষার জন্য জাপানি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এখন অনেক শিক্ষার্থীরই পছন্দের তালিকায় থাকে। বর্তমানে বিশ্বব্যাপী উচ্চতর গবেষণায় আগ্রহী শিক্ষার্থীরা গবেষণার জন্য বেছে নিচ্ছে এ দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। সম্প্রতি বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের জন্য জাপান সরকার ২০২০ সালের আন্ডারগ্র্যাজুয়েট, মাস্টার্স এবং পিএইচডি কোর্সে মনবুকাগাকুশো বৃত্তি ঘোষণা করেছে। এটি মনবুশো, মেক্সট নামেও পরিচিত। এ বৃত্তি সাধারণত দুইভাবে পাওয়া যায়। একটি হচ্ছে বাংলাদেশে অবস্থিত জাপান দূতাবাসের মাধ্যমে। আরেকটি হচ্ছে যে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে চাইছেন, সে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের মাধ্যমে। জাপানে বেশির ভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে মাধ্যম জাপানি। তবে ইংরেজিতেও বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ আছে।
মোট তিনটি ক্যাটেগরিতে এই বৃত্তি পাওয়া যাবে।
১) স্নাতক (আন্ডারগ্র্যাজুয়েট) স্তরে সাধারণ শাখার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পড়ার সময় এই বৃত্তি পাওয়া যাবে। বিষয়গুলি হল
ক) সোশাল সায়েন্সেস এবং হিউম্যানিটিজ। এর দুটি ভাগ রয়েছে: এ আর বি। এ-র মধ্যে রয়েছে ল’, পলিটিক্স, পেডাগগি, সোশিয়োলজি, লিটারেচার, হিস্ট্রি আর জাপানিজ ল্যাঙ্গুয়েজ। বি-তে রয়েছে ইকনমিক্স আর বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন।
খ) ন্যাচরাল সায়েন্সেস এর তিনটি ভাগ রয়েছে। এ, বি এবং সি। এ-তে সায়েন্স (ম্যাথমেটিক্স, ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি), ইলেকট্রিক এবং ইলেকট্রনিক স্টাডিজ, মেকানিক্যাল স্টাডিজ, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং, মেরিটাইম ইঞ্জিনিয়ারিং, আর্কিটেকচার, কেমিক্যাল স্টাডিজ ও বায়োটেকনলজি। বি-তে রয়েছে এগ্রিকালচারাল স্টাডিজ, হাইজিনিক স্টাডিজ নার্সিং এবং বায়োলজি। মেডিসিন আর ডেন্টিস্ট্রি পড়ছে সি-এর মধ্যে। এমনিতে এই কোর্সগুলি চার বছরের হলেও মেডিক্যাল ডিগ্রি কোর্সটি কিন্তু ছয়বছরের। উল্লেখ্য, সর্বোচ্চ ৩ টি সাবজেক্টের নাম প্রেফারেন্স হিসেবে দেয়া যাবে। সব গুলো সাবজেক্ট একটি ভাগের হতে হবে। শুধুমাত্র যারা ফার্স্ট প্রেফারেন্স ভাগ সি থেকে দিবেন তারা অন্য ভাগ থেকে পরের প্রেফারেন্স দিতে পারবেন, যেহেতু ভাগ সি তে সাবজেক্ট শুধু ২ টি আছে।
২) কলেজ অব টেকনলজিগুলিতে পড়ার ক্ষেত্রে দেওয়া হবে এই বৃত্তি। পাঠ্য বিষয়গুলি হল মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং, ইনফরমেশন, কমিউনিকেশন অ্যান্ড নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ারিং, মেটিরিয়ালস্ ইঞ্জিনিয়ারিং, আর্কিটেকচার অ্যান্ড সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, মেরিটাইম ইঞ্জিনিয়ারিং ইত্যাদি। অধিকাংশ কোর্সের মেয়াদ তিন বছরের। তবে মেরিটাইম ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে সময় লাগে সাড়ে চার বছর।
৩) যারা সেনশু গাকো অর্থাৎ স্পেশালাইজড ট্রেনিং কলেজে পড়াশোনা করতে ইচ্ছুক তারা পড়তে পারে টেকনলজি, পার্সোনাল কেয়ার এবং নিউট্রিশন, এডুকেশন এবং ওয়েলফেয়ার, বিজনেস, ফ্যাশন এবং হোম ইকনমিক্স, কালচার এবং জেনারেল এডুকেশন -এর মতো নানা বিষয়ে। সাধারণত এই সব কোর্সগুলির মেয়াদ দু’বছর। এ ক্ষেত্রেও মেক্সট স্কলারশিপ পাওয়া যাবে।
আবেদনের যোগ্যতা-
১। বাংলাদেশি নাগরিক হতে হবে।
২। মাস্টার্স এবং পিএইচডি কোর্সের ক্ষেত্রে ২রা এপ্রিল ১৯৮৫ এবং আন্ডারগ্র্যাজুয়েট কোর্সের ক্ষেত্রে ২রা এপ্রিল ১৯৯৫ এর পরে জন্মগ্রহণকারীরা আবেদন করতে পারবে।
৩। সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হতে হবে।
৪। মিলিটারি পারসোনেল আবেদন করতে পারবেন না।
যা যা পাবেন-
১। রিসার্চ স্টুডেন্ট ১ লক্ষ ৪৩ হাজার ইয়েন, মাস্টার্স স্টুডেন্ট ১ লক্ষ ৪৪ হাজার ইয়েন, ডক্টরাল স্টুডেন্ট ১ লক্ষ ৪৫ হাজার ইয়েন এবং আন্ডারগ্রাজুয়েটে বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা ১ লক্ষ ১৭ হাজার ইয়েন মাসিক ভাতা হিসেবে পাবেন।
২। পরীক্ষা ফি, টিউশন ফি স্কলারশিপ কর্তৃপক্ষ বহন করবে।
৩। বাংলাদেশ থেকে জাপানে যাওয়ায় বিমান ভাড়া স্কলারশিপ কর্তৃপক্ষ বহন করবে।
জাপানি কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট : এশিয়া ইউনিভার্সিটি ( www.asia-u.ac.jp ), ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব জাপান (www.iuj.ac.jp), ফুকুই ইউনিভার্সিটি (www.u-fukui.ac.jp), হিরোশিমা শুডো ইউনিভার্সিটি (www.shudo-u.ac.jp), চিবা ইউনিভার্সিটি (www.chiba-u.ac.jp), আইচি ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (www.aitech.ac.jp)
তুর্কী বুলসারী (Turkiye Burslari) স্কলারশিপ সম্পর্কে জানোন ....