চাঁদে রহস্যময় কুঁড়েঘর |
চাঁদের দুটো দিক রয়েছে। একটা দিক আমরা সচারাচর রাতের বেলা আকাশের দিকে তাকালেই দেখতে পাই। আর অন্যদিকটা সবসময় সূর্যের দিকে মুখ করে থাকে, এটিকে চাঁদের ফার সাইড (Far side of Moon) বলা হয়। আর এই ফার সাইডে রয়েছে ভল কারমান ক্রেটার যা নিয়ে গবেষণা করার জন্য চীন ইয়ুতু-২ নামে রোবট চালিত নভোযান পাঠিয়েছে।
সম্প্রতি কাজ করার সময় চন্দ্রের উত্তর দিকে একটি কুঁড়েঘরের দেখা মিলে। চায়না ন্যাশনাল স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (সিএনএসএ) সামাজিক মাধ্যম উইচ্যাটের চীনা সংস্করণের এক পোস্টে এটিকে 'রহস্যময় কুঁড়েঘর' বলেন। সাথে মজা করে বলেছেন 'এটা কি জরুরি অবতরণের পর এলিয়েনদের তৈরি ঘর? নাকি চাঁদকে জানার জন্য পূর্বসূরিদের পাঠানো কোনো নভোযান?'
বর্তমানে রোবটযানটি বস্তুটি থেকে ২৬০ ফুটের মতো দূরেত্ব রয়েছে। তবে আসলে বস্তুটা কি তা দেখার জন্য এটির কাছাকাছি পাঠানো হবে ইয়ুতু-২। তার জন্য সময় লাগবে ২-৩ চন্দ্রদিন অর্থাৎ পৃথিবীর হিসেবে ২-৩ মাস। কারণ ইয়ুতু-২ সৌরশক্তিতে চলে অর্থাৎ সূর্যের আলো ছাড়া চলতে পারে না। আর চাঁদের রাতের দীর্ঘকাল দুই সপ্তাহ। আবার সূর্য ঠিক মাথার উপর থাকলে অতিরিক্ত গরম হওয়ার কারণে ভয়ে চালানো হয় না। এছাড়াও চাঁদের এই দিকে অনেক খানাখন্দ থাকায় এইসব এড়িয়ে আস্তে ধীরে চলতে হয়। এইবস্তুটি কি হতে পারে তা নিয়ে অনেক ধারণা রয়েছে। এটি হয়তবা হতে পারে চাঁদের পৃষ্টে বড় কোন আঘাত হওয়ার কারণে সৃষ্ট কোন পাথরখন্ড। এর কারণ পৃথিবীর মত চাঁদের মধ্যে কোন বায়ুমন্ডল না থাকায় মহাকাশ থেকে যেকোন বড় পাথরখন্ডের আঘাত করতে পারে। তাছাড়া যদি এটা হয়ে থাকে চাঁদের নিচের পৃষ্ট থেকে উঠে আসা কোন পাথর তাহলে বিজ্ঞানীদের চাঁদের মাটির নিচের স্তর সম্পর্কে ধারণা পাবে এবং তা নিয়ে গবেষণা করতে পারবে।
২০১৯ সালের জানুয়ারীতে চীন এই সৌর চালিত রোভার পাঠায়। চলতি বছরের সেপ্টেম্বের মাসে এই রোভারের চন্দ্রবুকে ১০০০ দিন পূর্ণ হয়েছে। এরমধ্যে এটি ভন কারমান ক্রেটারের ১৮৬ কিলোমিটার দীর্ঘ অতিক্রম করেছে।